টাঙ্গাইলেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আর এই সংক্রমনের উর্ধ্বগতিতে আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন জেলার সতেচন মহল। টাঙ্গাইলকে পরিপূর্ণ কঠোর লকডাউনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
টাঙ্গাইলে প্রথম আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় ০৮ মার্চ। সেই দিন থেকে ৭৯তম দিনে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা একশ’তে পৌঁছায়। আর তার ১০ দিন পর অর্থাৎ ৫ জুন জেলার আক্রান্তের সংখ্যা দুইশ’ পেরিয়ে হয় ২১৯ জনে। আর তার ৮ দিন পর অর্থাৎ ১৪ জুন জেলার আক্রান্তের সংখ্যা তিনশ’ পেরিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত টাঙ্গাইলবাসী।
আজ রোববার (১৪ জুন) তারিখ পর্যন্ত জেলার মোট করোনা আক্রান্ত সংখ্যা ৩১৯ জন। এর মধ্যে মির্জাপুর ৭৫, সদর ৪৬, নাগরপুর ৩২, কালিহাতী ৩০, মধুপুর ২৮, দেলদুয়ার ২৬, ঘাটাইল ১৯, ধনবাড়ী ১৮, গোপালপুর ১৭, ভূঞাপুর ১২, সখিপুর ১২ এবং বাসাইল ৪।
এই সময়ে টাঙ্গাইলে ৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। তাদের মধ্যে ঘাটাইল ২, মির্জাপুর ১, ধনবাড়ী ১, সদর ১, দেলদুয়ার ১। পাশাপাশি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০৮ জন।
এবিষয়ে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ বলেন, প্রথমদিকে টাঙ্গাইলকে যেভাবে লকডাউনের আওতায় হয়েছিল তাতে করে টাঙ্গাইলের করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে লকডাউন শিথিল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুর থেকে লোক প্রবেশ করায় সংক্রমনের হার দ্রæত গতিতে বেড়ে যায়। এই মূহুর্তে টাঙ্গাইলকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনা দরকার।
অপরদিকে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. ওয়াহীদুজ্জামান বলছেন যে, টাঙ্গাইলের সংক্রমনের হার সত্যিই উদ্বেগজনক। প্রথমদিকে জেলার আক্রান্তের হার পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সপিং মল খুলে দেয়া ও বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজনের আসা-যাওয়ায় সংক্রমনের হার অতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বিষয়ে অঞ্চল ভিত্তিক লকডাউন করে প্রাথমিক ভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হবে। তবে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। দ্রæতই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সংক্রমনের উর্ধ্বগতির বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রীয় ভাবে টাঙ্গাইলকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম দিকে আক্রান্তের হার কম থাকলেও বর্তমানে আক্রান্তের হার খুবই বেশি। জেলার সব মহলের সাথে আলোচনা করে এই বিষয়ে দ্রæত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এবিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান মুঠো ফোনে জানান, পরিস্থিতি প্রথম দিকে ভালো থাকলেও পরবর্তী সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা-বন্ধ, খোলা-বন্ধ ও সেই সময় মানুষের এলোমেলো চলাফেরায় সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সরকার নির্দেশিত রেড, ইয়োলো ও গ্রীণ জোন সঠিক ও কঠোর ভাবে মেনে চললে এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।