নিজস্ব প্রতিবেদক : মা নাদীয়া জাহান শেলীর মৃত্যুর বিচার চান ৫ বছরের জমজ দুই ভাই হাসান ও হোসাইন এবং তার বোন সোনালী আক্তার।
এর আগে ৮ এপ্রিল রাতে তার মায়ের টাঙ্গাইল কারাগারে মৃত্যু হয়।
পরে ১৯ এপ্রিল তার বাবা মো. মিনহাজ উদ্দিন বাদি হয়ে জেল সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডেপুটি জেলারসহ অজ্ঞাতনামা অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
আসামীদের বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
মিনহাজ উদ্দিন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার শালগ্রামপুর এলাকার মো. আক্কাছ আলীর ছেলে।
আরো পড়ুন – গ্রাম পুলিশের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত শিকদার
সংবাদ সম্মেলনে যা বলা হয় –
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মিনহাজ উদ্দিনের পক্ষে তার মেয়ে সোনালী আক্তার।
সোনালী আক্তার জানায়, তার মা নাদীয়া জাহান শেলী ডায়াবেটিক ও কিডনী রোগে আক্রান্ত ছিলো।
তারপরও গত ৪ এপ্রিল অসুস্থ অবস্থায় তার মা অন্য একটি মামলায় সখীপুর আমলী আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন।
জামিনের জন্য আদালতে শারীরিক অসুস্থতার সকল প্রতিবেদন (রিপোর্ট) দাখিল করার পরও বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
নাদীয়া জাহান শেলী অসুস্থ হওয়ায় তার সুচিকিৎসার জন্য জেল সুপারকে নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।
আরো পড়ুন – সাগরদিঘি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!
কিন্তু জেল সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডেপুটি জেলারসহ অজ্ঞাতনামা অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিরা তার চিকিৎসার সু-ব্যবস্থা করেন নি। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে তাকে সাধারণ কয়েদী হিসাবে জেনারেল ওয়ার্ডে রাখেন।
চিকিৎসা না পেয়ে তিনি কারাগারে খুবই কষ্ট করেছেন। অবশেষে তিনি চিকিৎসার অভাবে ৮ এপ্রিল রাতে মারা যান।
তিনি আরও জানান, ১৯ এপ্রিল তার বাবা মিনহাজ উদ্দিন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টাঙ্গাইল সদর থানা আমলী আদালতে বাংলাশে দন্ডবিধি আইনের ১০৪(খ)/১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
বিচারক এ অবহেলিত হত্যা মামলার বিষয়ে তার আদেশে উল্লেখ করেন, ‘আসামীগণ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
তাই অভিযোগের গভীরতা বিবেচনায় মামলার ঘটনার বিষয়ে পুলিশ বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দ্বারা তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হলে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হবে বলে আদালত মনে করেন।
আরো পড়ুন – সোহেল হাজারী কোন অথরিটিতে এমপি? জানতে চান হাইকোর্ট
সার্বিক পর্যালোচনায় টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারকে মামলার ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ পূর্বক তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।’
বাদিদের বক্তব্য –
হাসান ও হোসাইন এবং সোনালী আক্তার জানায়, আমার মা খুব অসুস্থ ছিলো; তারপরও জেল সুপার তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি।
জেল সুপার আদালতের নির্দেশকে অমান্য করেছে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
আরো পড়ুন – বড় ধরনের পরিবর্তন প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষাক্রমে
জেল সুপারের বক্তব্য –
জেলা সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নাদীয়া জাহান শেলীকে কারাগারে সুচিকিৎসাই দেয়া হয়েছে।
তিনি মারা যাওয়ার পর সকল প্রকার আইনী প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লাশ নেয়ার সময় তাদের কোন অভিযোগ ছিলো না। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার নিজেই তদন্ত করছেন। সম্পাদনা – অলক কুমার