গ্রাম পুলিশের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত শিকদার

ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত শিকদার ও গ্রাম পুলিশ লাল মিয়া

অলক কুমার : অতিদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পে চরম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত শিকদারের বিরুদ্ধে।

সেই সাথে তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন এক গ্রাম পুলিশ।

গ্রাম পুলিশের করা অভিযোগর পরই তার মুখোমুখি হয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

যদিও অধিকাংশ ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসীর সব অভিযোগই ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের বিরুদ্ধে ।

আরো পড়ুন – সাগরদিঘি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কর্মসৃজন প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

এরপর থেকেই হেকমত সিকদার বিভিন্ন ভাবে গ্রাম পুলিশ লাল মিয়ার বিরুদ্ধে নানা প্রকার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করতে থাকে এবং গ্রাম পুলিশ লাল মিয়াকে একজন নেশাখোর ও মাদক বিক্রেতা হিসেবে আখ্যা দিতে থাকেন।

ইউপি সদস্যদের বক্তব্য –

গ্রাম পুলিশ লাল মিয়া সম্পর্কে জানতে কথা হয় সাগরদিঘী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওয়াজেদ আলীর সাথে।

জমি বিক্রয় নোটিশ

ওয়াজেদ আলী বলেন, লাল মিয়া আমার ওয়ার্ডের কামালপুর গ্রামের বাসিন্দা।

দেড় বছর যাবত তার চাকরি হইছে; সে সারাক্ষণ ইউনিয়ন পরিষদে থাকে।

আর চেয়ারম্যানের বেশির ভাগ কাজ লাল মিয়াই করে।

আরো পড়ুন – সাগরদিঘী ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারেরর বিরুদ্ধে মানববন্ধন

সে যদি নেশাখোর বা মাদক বিক্রেতা হয়ে থাকে তাহলে এতদিন চেয়ারম্যান কেন তাকে সাথে রাখলেন।

তিনি আরো বলেন, লাল মিয়া আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা, আমি তাকে কোনদিন নেশা করতে দেখি নাই বা শুনি নাই।

এসময় এই ইউপি সদস্য চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ৪০ দিনের হতদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পে ৮২ জন লেবার কাজ করার কথা। একজন লেবারও কাজ করে নাই, এক কোদাল মাটিও কাটা হয় নাই।

গ্রাম পুলিশ লাল মিয়া নেশাখোর ও মাদক ব্যবসায়ী কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে সাগরদিঘী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, আল্লাহর কসম করে বলতেছি; আমি লাল মিয়াকে কোনদিন একটা বিড়িও খাইতে দেখি নাই।

সাগরদিঘীতে মানববন্ধন

তিনি বলেন, আপনি আসেন; আমি প্রমাণ করে দিবো, লাল মিয়া নেশা খায়ও না বিক্রিও করে না।

এসময় তিনি বলেন, গত ৪ বছরে ৩টি বিধবা ভাতা কার্ড পাইছি।

আরো পড়ুন – নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতেই লোক ভাড়া করে মানববন্ধন করেছে চেয়ারম্যান

৪০ দিনের কর্মসূচী সম্পর্কে এই ইউপি সদস্য বলেন, চেয়ারম্যান সাব কোন দিনও বলেন নাই এই কাজটা আসছে তোমরা কিভাবে করবা? সবসময় বলেন, নতুন ইউনিয়ন কিছুই আসে না।

তবে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনিত অতিদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পে চরম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ উঠেছে, তার সত্যতা পাওয়া গেছে ইউপি সদস্যদের বক্তব্যে।

অন্যদিকে চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য এই মানববন্ধন করেছে বলে দাবি করেছেন অধিকাংশ ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসী।

অন্যান্য ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, আশেপাশে ইউনিয়ন থেকে টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে মানববন্ধন করেছেন চেয়ারম্যান।

ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

চেয়ারম্যান হেকমত শিকদারের বক্তব্য –

এই বিষয়ে চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার বলেন, তাদের কথা হইলো আমি কেন ধনী হইলাম কেন? এটা নিয়েই তাদের মাথা ব্যথা।

আমার ১০ একর জমি আছে, ২০ পাখি জমির উপর লেবু বাগান আছে, বাংলাদেশ সরকারের ৬টি লাইসেন্স আছে।

আরো পড়ুন – দ্বিতীয় দিনে টাঙ্গাইল সদরে আরো ৪টি ক্লিনিক সিলগালা

এসময় তিনি বলেন, আমি সাগরদিঘীতে যে পরিমান উন্নয়নমূলক কাজ করেছি, সারা বাংলাদেশের কোন চেয়ারম্যান এই পরিমান কাজ করতে পারে নাই।

এসময় তিনি অতিদরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পে চরম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের যে অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপি ও খান পরিবারের ষড়যন্ত্রের স্বীকার আমি।