ভূঞাপুর প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে মুন্নাফ আলী নামে মাদরাসার একজন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের অবহিত না করেই টাকার বিনিময়ে তাকে নিয়োগ দেন।
আরো পড়ুন – হেকমত চেয়ারম্যান ২ দিনের রিমান্ডে, এলাকায় মিষ্টি বিতরণ
এদিকে অবৈধভাবে এই নিয়োগ বাতিলের জন্য বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বরাবর পর্ষদের সদস্যরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
জানা গেছে, ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করার পরের দিনই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও সদস্যদের অবহিত না করেই সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ পরিছন্নতা কর্মী, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় পত্রিকাতে।
তবে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য কোন নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়নি।
এতে পরবর্তিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর ) সন্তোষ জাহ্নবী উচ্চ বিদ্যালয় নিয়োগ পরীক্ষা হয়।
তবে সেখানে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপস্থিত ছিলেন না।
ডিজি প্রতিনিধি, শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষক উপস্থিত থেকে শুধুমাত্র মুন্নাফ আলীর পরীক্ষা নেয়া হয়।
পরে বিষয়টি বিদ্যালয়ে এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে জানাজানি হলে মুন্নাফ আলীর যোগদান বন্ধ রাখেন প্রধান শিক্ষক জাফর ইকবাল শাহীন।
পরবর্তিতে সভাপতিকে ম্যানেজ করে সিরাজকান্দি দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মুন্নাফ আলীকে নিয়োগপত্র দিয়ে বিদ্যালয়ের যোগদান করানো হয় গত অক্টোবরে।
এদিকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে নিয়োগের অভিযোগ এনে সেটি বন্ধ করার জন্য পরিচালনা পর্ষদের ৬ সদস্য সভাপতি বরাবর অভিযোগ দেয়।
কিন্তু অভিযোগের কোন সুরাহা না করেই টাকার বিনিময়ে মুন্নাফ আলীকে নিয়োগ দেয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক, সভাপতি সহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য :
ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, প্রধান শিক্ষক টাকার বিনিময়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কর্মচারীদের নিয়োগ দিয়েছে কাউকে না দুর্নীতির মাধ্যমে।
এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। মিটিং না করেই কাগজপত্রে মিটিং দেখিয়েছে প্রধান শিক্ষক।
শিক্ষকদের বেতন উত্তোলনের কথা বলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে।
আরো পড়ুন – হত্যা মামলার আসামি হেকমত চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার, কারাগারে প্রেরণ
সদস্য রঞ্জু মিয়া বলেন, নিয়োগের বিষয়ে আমাদের কাউকেই অবহিত করা হয়নি। সভাপতির বাসায় বসে মিটিং করার সময় জানানো হয়।
ওই মিটিংয়ে সভাপতি নিজেও বলেছে নিয়োগের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে জানায়নি।
পরে মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হল পুনরায় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য।
কিন্তু সেটি না করেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছে; এখানে আমাদেরকে না জানিয়ে নিয়োগ দেয়া সেটি অপমান করা হয়েছে।
ফলদা রামসুন্দর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাফর ইকবাল শাহীন বলেন, যথাযথ নিয়মের মাধ্যমে সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে মুন্নাফ আলীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
ওই শিক্ষককে নিয়োগের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যও সুপারিশ করেছে। কোন ধরনের অনিয়ম করা হয়নি।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তাহেরুল ইসলাম তোতা বলেন, প্রধান শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে নিয়ম মেনেই করেছে।
পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অভিযোগের কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি।
অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা – অলক কুমার