কালিহাতীতে ইউনিয়ন আ’লীগের বর্ধিত সভায় দুইগ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৬

কালিহাতী সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার সহদেবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ছয় জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পৌজান বাজারে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে দুইজনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে।

সংঘর্ষে আহতরা হচ্ছেন – সহদেবপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্স ওয়াজেদ ও শামীম আল মামুন, কালিহাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন, আ’লীগ নেতা শেখ শাহীন ভূঁইয়া, উজ্জল মিয়া ও জাহাঙ্গীর হোসেন।

যা ঘটেছিল সভায় –

শনিবার বিকালে সহদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সভা কক্ষে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি মকবুল হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বর্ধিত সভা শুরু হয়।

সভায় উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার পুরাতনদের বাদ দিয়ে নবগঠিত ওয়ার্ড কমিটি অবৈধ মন্তব্য করে বক্তব্য দেন।

তখন স্থানীয় এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারি দাঁড়িয়ে সভাপতির ওই বক্তব্যের বিরোধীতা করেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়।

এ ঘটনায় বর্ধিত সভায় হট্টগোলের সৃষ্টি হলে সভা স্থগিত করে জেলা আ’লীগের প্রতিনিধি বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ তারেক পলু সহ নেতৃবৃন্দ চলে যান।

এ সময় এমপি হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারি সভাস্থল থেকে পায়ে হেঁটে পাশের পৌজান পৌঁছান।

সেখানে অবস্থানরত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন এমপি’র অনুসারী উপজেলা কৃষকলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান ফরিদের রোষানলে পড়েন।

এক পর্যায়ে এমপি’র অনুসারী ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদারের সমর্থিতদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে ছয় নেতা আহত হন।

টাঙ্গাইল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত আ’লীগ নেতা প্রিন্স ওয়াজেদ বলেন, বর্ধিত সভা স্থগিত হওয়ার পর তারা পৌজান বাজারে চা-স্টলে বসে ছিলেন।

এসময় এমপি’র অনুসারী মোখলেছুর রহমান ফরিদ ও ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে ১০-১২ ব্যক্তি তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

ঘটনার প্রেক্ষিতে উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দের কথা –

উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান ফরিদ জানান, ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিন্স ওয়াজেদ ও শেখ শাহিনসহ কিছু লোকজন পৌজান বাজারে বসে এমপিকে নিয়ে কটুক্তি করছিলেন।

পাইকড়া ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হায়দার আলী মোল্লা ও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সেলিম মিয়া ওই কটুক্তির প্রতিবাদ করলে এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও দশকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ভূঁইয়া বলেন, বর্ধিত সভায় হট্টগোল হয়েছে, সেখানে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।

সভা স্থগিত করে চলে আসার পর পৌঁজান বাজারে মারামারির ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ তারেক পলু জানান, নতুন ওয়ার্ড কমিটির বৈধতা নিয়ে এমপি ও সভাপতির তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে একটি পক্ষ বর্ধিত সভায় হট্টগোল সৃষ্টি করে।

সভা স্থগিত করে চলে আসার পর পৌজান বাজারে মারামারী হয়েছে বলে শুনেছেন।