কালিহাতীতে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে পেটানোর অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. বকুল আহাম্মেদকে ইউপি চেয়ারম্যান চান মামুদ পাকিরের নির্দেশে ১০-১২ ব্যক্তি পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মো. বকুল আহাম্মেদ বাদি হয়ে বুধবার (১০ জুন) বিকালে ইউপি চেয়ারম্যান সহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

জানা যায়, বল্লা ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. বকুল আহাম্মেদ কালিহাতী উপজেলা সদর থেকে বাড়ি ফেরার পথে মঙ্গলবার(৯ জুন) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের গেটের সামনে পৌঁছলে কতিপয় ব্যক্তি তার পথরোধ করে। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান চান মাহমুদ পাকিরের নির্দেশে মো. সবুজ মিয়া, গাফফার হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব সহ ১০-১২ যুবক অতর্কিতভাবে তাকে কিল-ঘুষি মারে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অন্যরাও লাথি ও কিল-ঘুষি মারে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা মো. বকুল আহাম্মেদকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রামপুর বাজারে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়।

স্থানীয়রা জানায়, চান মাহমুদ পাকির স্থানীয় শিল্পপতিদের একজন। তার শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকরা প্রায়ই যৌন নির্যাতনসহ নানা হয়রানির শিকার হয়ে থাকে, আর ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকির বিষয়টি সবারই জানা। সেসব ঘটনা গোপনে মিমাংসা করা হয়। তারা জানায়, বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন না পেয়ে চান মামুদ পাকির আওয়ামী লীগে যোগ দেন। পরে আওয়ামী লীগের দলীয় টিকিটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, বল্লা বাজার শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি, বল্লা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি, বল্লা উচ্চ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও মাধ্যমিক তাঁতি সমিতির সভাপতি সহ নানা সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন রয়েছেন। এসব পদ-পদবীর কারণে তিনি নিজেকে সর্বেসর্বা ভাবতে শুরু করেছেন। পদ-পদবী টিকিয়ে রাখতে তিনি অলিখিত এক সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছেন। কেউ তার মন্দ কাজের প্রতিবাদ করলে তাকে ওই বাহিনী বা ভিন্ন কায়দায় শায়েস্তা করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. বকুল আহাম্মেদের উপর হামলা তারই অংশ মাত্র।

অভিযোগকারী মো. বকুল আহাম্মেদ জানান, ইউপি চেয়ারম্যান চান মামুদ পাকির একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে তিনি বিএনপি মনোভাবাপন্ন লোকদের সাথে নিয়ে সব সময় পরিষদ পরিচালনা করেন। যে কোন কাজে তিনি বিএনপির লোকদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন। যেমন ইউনিয়ন পুলিশিং কমিটি গঠনকালে তিনি ছাত্রদল নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসান।

বুধবার (১০ জুন) বিকালে সরেজমিনে মামলায় অভিযুক্তদের সাথে ইউপি চেয়ারম্যান চান মামুদ পাকিরকে তার বাড়িতে শলা-পরামর্শ করতে দেখা যায়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান চান মামুদ পাকির জানান, মো. বকুল আহাম্মেদ বিএনপির একজন দালাল। ঐতিহ্যবাহী বল্লা ও রামপুর গ্রামের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির জন্য বকুল আহাম্মেদ এ ঘটনা সাজিয়েছেন। এ ধরণের কোন ঘটনা বল্লায় ঘটে নাই।

কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, বল্লা ইউপি চেয়ারম্যান সহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে দেয়া একটি অভিযোগ পেয়েছেন। থানার এসআই মনিরুজ্জামান বিষয়টি তদন্ত করছেন, তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।