জিয়াউর রহমান রাজাকারদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন – মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, জিয়াউর রহমান রাজাকার, আলবদর ও আলশামসদের পিচ কমিটির নেতাদের মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। আর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশি দূতাবাসে বিভিন্ন বড় বড় পদে পদায়ন করেছিলেন। আমি শ্রদ্ধা জানাতে পারতাম বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে কিন্তু যখন দেখি একজন খ্যাতিমান বীর গোলাম আযমের সাথে হাত মিলিয়ে এক মঞ্চে বসে একত্রে শেখ হাসিনার সরকারকে পতন ঘটানোর জন্য একত্রে সভা করেন। তখন আর শ্রদ্ধা জানাতে পারি না। আমার আরেক বন্ধু শাজাহান সিরাজ মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ৩রা মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সামনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন। পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের আমলে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন- তিনি নাকি জিয়াউর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। আমার দুঃখ হয় যখন তিনি পার্লামেন্টে দাড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর ছবি দেখিয়ে বলেছিলেন- এ ছবি এখানে কেন? বর্ণচোরা শাজাহান সিরাজরা রুপ পাল্টে বলেন, জিয়াউর রহমানের ডাকে নাকি স্বাধীনতা করেছে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্ত¡রে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া রাজাকারদের তালিকা যাচাই-বাছাই না করেই প্রকাশ করে ভুল করেছি। এই ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের তালিকা প্রকাশ করে। ১০ সহস্রাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে প্রকাশ করা প্রথম তালিকায় অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামও ঢুকে পড়ে। এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরে এ তালিকা স্থগিত করা হয়।

মোজাম্মেল হক বলেন, ভুল করেছি। প্রত্যাহারও করে নিয়েছি। এবার আর ভুল হবে না। তাই বলে রাজাকারের তালিকা হবে না, তা নয়। রাজাকারের তালিকা হবেই হবে। তিনি আরো বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা নিয়ে আর রাজাকার-আলবদর ও আলশামসের তালিকা প্রকাশ করা হবে না। নিবিড় অনুসন্ধান চালিয়ে উপজেলা ভিত্তিক রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা হবে।

তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। ইতিমধ্যে তালিকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন সেই তালিকা আবার যাচাই করার কাজ চলছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের সরকারিভাবে পরিচয়পত্র দেয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২৬ মার্চের মধ্যেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ছবিসহ পরিচয়পত্র দেয়া হবে।

অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক সার্বিক মোশারফ হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম আরা নিপা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনছার আলী বি.কম প্রমুখ।