প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে লৌহজং উদ্ধার কার্যক্রমে বাঁধা; পরিস্থিতি থমথমে

উন্নয়নের নামে পুকুর, খাল-বিল ও নদী ভরাট থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, উন্নয়নের নামে পুকুর ও খাল ভরাট করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। এগুলোতে কীভাবে পানি সংরক্ষণ করা যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এসময় তিনি বলেন, নদীগুলোর নাব্যতা রক্ষা করতে হবে। নদী আমাদের অভিশাপ না, আশীর্বাদ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।

২০১৮ সালের ২৭ মার্চ, সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব পানি দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সকলের প্রতি তিনি এই আহবান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে টাঙ্গাইল শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া লৌহজং নদীর দুই পাড়ে গড়ে উঠা অবৈধ বস্তিতে দীর্ঘদিন পর উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হলেও টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়রের হস্তক্ষেপে অনেকটাই স্থবির হয়ে পরেছে এই কার্যক্রম। বস্তিবাসী তাদের পূর্নবাসন না করা পর্যন্ত এখান থেকে সরে যেতে চাইছেনা।

অন্যদিকে টাঙ্গাইলের সুশীল সমাজ ও স্থানীয় লোকজন নদীর দুই পাড়ের বস্তি উচ্ছেদ করায় জেলা প্রশাসনকে স্বাগত জানিয়েছেন। ফলে বস্তি এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

টাঙ্গাইল শহরের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া লৌহজং নদীর দুই পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠা বস্তিটি বার বার ভেঙ্গে ফেলার কার্যক্রম হাতে নিলেও স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কারনে এই বস্তি উচ্ছেদ করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। ফলে নদী দখল, দূষনের স্বীকার হয়ে নদীর স্বাভাবিক গতিতে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইলের হাউজিং এস্টেট এলাকাটির সামনে এমন বস্তি থাকায় এর সৌন্দর্য পাচ্ছেনা। চুরি ডাকাতিসহ নিরাপত্তা নিয়ে আশংকায় রয়েছে হাউজিং এস্টেটের মালিকরা।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৬ সালে সাবেক জেলা প্রশাসক মাহবুব হোসেন নদী উদ্ধারকে কেন্দ্র করে বস্তিটি উচ্ছেদ করতে চাইলেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে উদ্ধার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পূনরায় বৃহস্পতিবার ((২৩ জানুয়ারি) সকালে হাউজিং সোসাইটি, গণপূর্ত বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে বস্তি উদ্ধারে আসে। সকালের দিকে কিছু অংশ ভেঙ্গে ফেলার পরেই টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র বস্তিতে এসে বস্তি ভাঙ্গতে নিষেধ করেন। পর থেকেই উচ্ছেধ অভিযান কিছুটা স্থবির হয়ে যায়। তবে এখন হাউজিংয়ের ভিতরে অবৈধ স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে।

এদিকে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন জানিয়েছেন, পরিকল্পনা ছাড়াই বস্তির উদ্ধার করতে আসা ঠিক হয়নি। এরা নিরীহ মানুষ এদের পূর্নবাসন করে তার পর বস্তি উচ্ছেদ করতে হবে। এই মূহুর্তে বস্তি উচ্ছেদ করা যাবেনা।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. রোকনুজ্জামান জানিয়েছেন, লৌহজং নদীর পাড়ে গড়ে উঠা বস্তিসহ আশপাশের অবৈধ স্থাপনা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে।