ভূঞাপুর থানায় দোকান নির্মাণ; ওসির বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ

ভূঞাপুর থানায় দোকান নির্মাণ

ভূঞাপুর প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার ভিতর নতুন করে দোকান নির্মাণের ফলে জায়গা সংকুচিত হচ্ছে।

একদিকে যেমন নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে অন্যদিকে ব্যবসায়ীকে লাভবান করা হচ্ছে।

অভিযোগ উঠেছে থানার ওই দোকান নির্মাণ করতে লাখ লাখ টাকা দেনদেন হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, থানা মূল গেটের প্রবেশ পথেই নতুন করে দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।

তারপাশেই দোকানের মালিক রাশেদুল এই দোকান নির্মাণের কাজ করছেন।

আরো পড়ুন – ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি কিন্তু কিশোরী গর্ভবতী!

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা থেকে স্থাপনা বা ভবন নির্মাণে কোন অনুমতিও নেয়া হয়নি।

জানা গেছে, ভূঞাপুর থানার সামনের অংশে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা নিয়ে তৎকালিন একজন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রথম দোকান নির্মাণের কাজ শুরু করেন।

এসময় ৩৪টি দোকান নির্মাণ করা হয়। পরে সেগুলো পর্যায়ক্রমে আওয়ামীলীগ নেতা ও ব্যবসায়ীরা বরাদ্দ পান।

এরপর থানা গেটের দুইপাশে আরো দুইটি দোকান ঘর নির্মাণ করেন আরেক তৎকালীন ওসি রাশিদুল ইসলাম।

বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা এসব দোকান নিজেদের টাকায় নির্মাণ করেন; যা পরবর্তিতে নির্মাণের খরচের সেই টাকা “জামানত” হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এরপর প্রতিমাসে থানায় ভাড়া প্রদান করে বরাদ্দ পাওয়া মালিকরা। এদিকে নতুন করে থানার ভিতর আরেকটি দোকান নির্মাণ করা হ্েচ্ছ।

নিয়ম অনুযায়ী, কোন থানায় যদি কোন স্থাপনা বা দোকান নির্মাণ করা হয়। তাহলে জেলা পুলিশ সুপার একটি মিটিং আহ্বান করে রেজুলেশনের মাধ্যমে সেখানে নির্মাণ বরাদ্দ দিয়ে বা ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ সম্পন্ন করবে; কিন্তু ভুঞাপুর থানার ভিতর দোকান নির্মাণে কোন নিয়ম মানা হয়নি।

ব্যবসায়ীদের বক্তব্য –

দোকান মালিক রাশেদ মেডিকেলের স্বত্ত্বাধিকারী রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমার দোকানের মালামাল রাখার জায়গা না থাকায় পুলিশ সুপার স্যারের কাছে জানাই।

তিনি অনুমতি দেয়ায় আমার দোকানের সাথেই বাড়তি একটি ঘর নির্মাণ করছি। এরজন্য কোন টাকা দেয়া হয়নি।

তবে দোকান নির্মাণ করতে যে টাকা খরচ হচ্ছে সেটি পরবর্তিতে জামানত হিসেবে থাকবে।

ব্যবসায়ীরা জানান, রাশেদ মেডিকেলের মালিকের অনেক টাকা। তাই টাকা খরচ করেই থানার ভিতরে দোকান নির্মাণ করছে; এতে থানার প্রধান তাকে সহযোগিতা করেছে।

আরো পড়ুন – কালিহাতীর চুরির ঘটনা এসপি জানলেও, ওসি জানেন না!

ভূঞাপুর বাজার সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরজু বলেন, যার সাথে যার ভাব সেই (ওসি) তাকে একটি করে দোকান নির্মাণ করে দিয়ে যান।

তবে অরক্ষিত করে থানার ভিতর এভাবে দোকান নির্মাণ করা ঠিক হচ্ছে না। বড় কোন স্বার্থ ছাড়া সেখানে দোকান নির্মাণ হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার এক কর্মকর্তা জানান, ওসির ব্যক্তিগত লাভ ছাড়া থানার ভিতরে এভাবে অপরিকল্পিতভাবে দোকান তোলা সম্ভব নয়।

এতে থানার চিত্র পাল্টানোসহ জায়গা সংকুচিত হচ্ছে। থানার সুন্দর্য্য নষ্ট হচ্ছে। এতে থানাও অনিরাপদ।

ভূঞাপুর পৌরসভা নির্বাহী প্রকৌশলী সুকমল রায় বলেন, আইন অনুযায়ী পৌরসভার মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে পৌরসভা কর্তৃক অনুমতির প্রয়োজন হয়।

কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ সেটি মানছে না। তারা ইচ্ছেমত ভবন নির্মাণ করছেন। আমাদেরকে অবহিতও করেনা।

পুলিশ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য –

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, থানার ভিতর এটা সংস্কারের অংশ আর কিছু না।

এবিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, আগেই একটা দোকান ছিল। সেটা সংস্কার করে বাড়তি করা হচ্ছে।

এতে যদি থানায় সেবার ক্ষেত্রে জনগণের অসুবিধার কারণ হয় তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সম্পাদনা – অলক কুমার