শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সমাহিত হলেন ভাষা সৈনিক মির্জা মাজহারুল

ডেস্ক নিউজ : শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সমাহিত হলেন ভাষাসৈনিক ও দেশের বিশিষ্ট শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মির্জা মাজহারুল ইসলাম।

রবিবার (১১ অক্টোবর) বাদ যোহর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে তার জানাজা শেষে রাজধানীর মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে।

এদিন সকাল সোয়া ৯টায় রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

ডা. মাজহারুল বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বারডেমের আইসিইউতে ভর্তি হন প্রবীণ এই চিকিৎসক ও ভাষা সংগ্রামী।

তিনি ১৯৫৪ সালে অনারারি হাউজ সার্জন হিসেবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে কর্মজীবন শুরু করেন মির্জা মাজহারুল ইসলাম।

পরে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপ্যাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের উপদেষ্টা হিসেবে কলেজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন তিনি।

ডা. মাজহারুল ১৯৯৩ সাল থেকে বারডেম সার্জারি বিভাগে মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন।

তিনি দুইবার বারডেমের অবৈতনিক মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশ কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনারসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ২০ বছর।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অনারারি চিফ কনসালটেন্ট ছিলেন।

তিনি এত বেশি সার্জারি করেছেন যা এই উপমহাদেশে একটি রেকর্ড।

১৯২৭ সালের ১ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার আগচারান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন প্রখ্যাত এই চিকিৎসক।

১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

তিনি ভাষা আন্দোলনের প্রথম দুটি সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলেন (১৯৪৭-১৯৪৮) এবং প্রথম শহীদ মিনারের পরিকল্পনা ও নির্মাণে বিশেষ অবদান রাখেন (২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২)।

নিজেকে ভাষা আন্দোলনের ‘আঁতুড় ঘরের’ সাক্ষী বলে দাবি করেন ডা. মাজহারুল।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার পর তিনি হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় অসংখ্য আহত ভাষাকর্মীর অস্ত্রোপচার করেন।

২০১৮ সালে ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য এই গুণীজনকে একুশে পদক প্রদান করা হয়।