কালিহাতী প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বিষাক্ত অ্যালকোহল নেশা জাতীয় ‘স্পিরিট’ পান করে চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
আরো দুইজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের পালিমা বাজারের জনসেবা হোমিও ফার্মেসী থেকে গত ১৮ মার্চ (শনিবার) রাতে অ্যালকোহল জাতীয় ‘স্পিরিট’ পান করায় বিভিন্ন সময়ে তারা মারা যান।
এদিকে স্পিরিট পান করে মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় আতংক ও শোক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলেন, শুধু নারান্দিয়া নয়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা মাদকে ছেয়ে গেছে; এতে যুব সমাজ ধ্বংসের পথে।
আরো পড়ুন – সরকারি কর্মচারিরা নিজেদের মনীব ভাবে – বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
এ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
জানা যায়, ১৮ মার্চ রাতে স্পিরিট পান করে অসুস্থ হওয়ায় পাঁচজনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার রাত ও রোববার (১৯ মার্চ) সকালের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রোববার রাত ২টার দিকে পালিমা গ্রামের মৃত ছামান আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৩৫) ও সোমবার (২০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুচুটি গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে জুলহাস মিয়া (৪২) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কুচুটি গ্রামের মৃত বক্কর আলীর ছেলে আমছের আলী (৫০) নিজ বাড়িতে মারা যান।
এ ঘটনায় অসুস্থরা হচ্ছেন- বিল পালিমা গ্রামের মুক্তার আলীর ছেলে মেহেদী ও কুচুটি গ্রামের জুয়েল।
এর মধ্যে মেহেদীকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর থেকে পালিমা বাজারের জনসেবা হোমিও ফার্মেসি বন্ধ করে দোকানের মালিক-কর্মচারীরা পলাতক রয়েছেন।
আরো পড়ুন – শিশুর শ্লীলতাহানীর চেষ্টা, ব্যর্থ হয়ে মুখে আগুনের ছ্যাকা দেয়ার অভিযোগ
স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুর রহমান জানান, ১৮ মার্চ রাতে পালিমা বাসস্ট্যান্ডের জনসেবা হোমিও ফার্মেসী থেকে অ্যালকোহল জাতীয় স্পিরিট কিনে পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তাদেরকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজন ও বাড়িতে এসে একজন মারা যান।
মেহেদী নামে একজনকে ঢাকার একটি হাসপাতালে স্থানান্তর (রেফার্ড) করা হয়েছে।
এই ঘটনার কয়েকদিন আগে তারাপদ নামের এক ব্যক্তিও স্পিরিট খেয়ে মারা গেছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান ও পুলিশের বক্তব্য –
নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদার জানান দীর্ঘদিন ধরে পালিমা বাসস্ট্যান্ডের জনসেবা হোমিও ফার্মেসী থেকে অ্যালকোহল জাতীয় স্পিরিট বেচাকেনা হচ্ছে।
ফার্মেসীতে অবৈধ স্পিরিট বিক্রি বন্ধের জন্য জনসেবা ফার্মেসির মালিক সামাদকে আগেও নিষেধ করা হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নারান্দিয়া বাজারের ব্যবসায়ী বিবেক মোদক দীর্ঘদিন যাবত মদ ও স্পিরিট বিক্রি করে আসছে; এর আগেও তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন।
কালিহাতী থানার নারান্দিয়া বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মিন্টু চন্দ্র ঘোষ বলেন, শুক্রবার (২৪ মার্চ) দুপুরে নারান্দিয়া বাজারের কালি মন্দিরের পাশের একটি মুদি দোকান থেকে অবৈধ মদ বিক্রির সময় বিবেক মোদক নামে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, স্পিরিট পান করে নিহত হওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।
থানায় কেউ অভিযোগও করেন নাই। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্পাদনা – অলক কুমার