টাঙ্গাইল সদর
,
সংবাদ দাতা
গাছের পাতায় জমে থাকা শিশির ঝরে পড়ার টুপটাপ শব্দ আর পাখিদের কলরবে মুখর গ্রামবাংলার শীতের সকাল সত্যিই মধুর। কুয়াশার ধূম্রজাল ভেদ করে পূর্ব আকাশে সূর্য উঁকি দিলে আলতো রোদে ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দুগুলো মুক্তোর মতো ঝলমল করে ওঠে। এই স্নিগ্ধ দৃশ্যই গ্রামীণ শীতের সকালকে করে তোলে অনন্য।
ভোরের নরম আলো জানালা ভেদ করে ঘরে ঢুকলেও কনকনে শীতে লেপ মুড়ি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার আলাদা আরাম আছে। হঠাৎ হিমেল বাতাসে ভেসে আসে খেজুর রস জ্বাল দেওয়ার মিষ্টি ঘ্রাণ। বাইরে বেরোলেই দেখা যায়, উনুন ঘিরে মা-চাচিদের ব্যস্ততা—পিঠা তৈরির আয়োজন, সঙ্গে গল্প আর হাসির কলরব।
শিশিরভেজা মেঠোপথ ধরে খালি পায়ে হাঁটে একদল শিশু। তাদের সঙ্গে কিছুটা এগোলেই চোখে পড়ে দিগন্তজোড়া সরিষাখেত। খোলা আকাশের নিচে যেন হলুদের চাদর বিছিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি। এমন দৃশ্য আজ শহুরে যান্ত্রিক জীবনে কেবল কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
শহরের ইট-কাঠ-পাথরের দেয়াল, যানবাহনের অবিরাম শব্দ আর ব্যস্ততার ভিড়ে শীতের এই অনুভূতি পাওয়া যায় না। গ্রামেই শীতের উপস্থিতি বেশি টের পাওয়া যায়—আর সেখানেই তার সৌন্দর্য সবচেয়ে গভীর। আধুনিক জীবনের প্রতিযোগিতায় মানুষ শহরমুখী হলেও হৃদয়ের কোথাও গ্রামবাংলার শীতের সকাল বারবার ফিরে আসে।
শীত এলেই মনে পড়ে ফেলে আসা দিনগুলোর কথা। হারিয়ে যাওয়া সেই সকালগুলো আর ফিরে না এলেও প্রকৃতির খুব কাছে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা মানুষের মনে আজও বেঁচে থাকে। শিশির, কুয়াশা আর নরম রোদের শীতের সকাল তাই আজও নস্টালজিয়ার এক অমলিন অধ্যায়।











