অভাব ও দূর্বলতার সুযোগে জোর করে ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ

অভাব ও দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে কালিহাতী উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের তিন ফসলি জমির মাটি কেটে নিয়ে একটি প্রভাবশালী মহল। উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভার মধ্যে কৃষি জমির উর্বর মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রির সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে বল্লা ও কোকডহরা, বীরবাসিন্দা ও নারান্দিয়া ইউনিয়নে।

একটি প্রভাবশালী মহল কৃষকদের অভাব ও দূর্বলতার সুযোগে তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মাটি কাটার শর্তে জমি কিনে নেয়। পরে তাদের ইচ্ছা মতো মাটি কেটে নেয়। কোন কৃষক মাটি সন্ত্রাসীদের কাছে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে অস্বীকার করলে তারা রাতের আধারে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যায়।

মহলটি প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়না। ফলে মাটি কেটে নেবার চুক্তিতে কিছু কৃষি জমি ক্রয় করে। কিন্তু ক্রয় করা জমির পাশের জমি ক্রয় না করেই জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যায় মাটি। ফলে সাধারণ কৃষকদের তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি সন্ত্রাসীদের হাত থেকে কোনভাবেই রক্ষা পাচ্ছেনা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, তারা জমির মালিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে অল্প দামে মাটি কিনে চড়া দামে ইটভাটায় এই মাটি বিক্রি করছে।

তারা আরো জানান, সাইফুল ইসলাম, কাদের, রিপন, সোহেল, শহিদ ও ওয়াদালীসহ ২০/২৫ জনের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট উপজেলার কোকডহরা ইউনিয়নের চারান, টেংগুরিয়া, নাগবাড়ি ইউনিয়নের মরিচা, পাইকপাড়া, বল্লা ইউনিয়নের কাজীপাড়া, নারান্দিয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দ, পালিমাসহ বিভিন্ন এলাকায় তিন ফসলি কৃষি জমির মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় চড়া দামে বিক্রি করছে। তারা এতটাই গভীর করে কেটে নিয়ে যায় যে কেউ দেখলে পুকুর না বলে উপায় থাকবে না। তারা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে কেটে নিচ্ছে। ফলে পাশের জমির মাটি স্বভাবতই ওই গর্তে পড়ে যায় এবং তা বিনা টাকায় ও বিনা অনুমতিতে নিয়ে যায় তারা। ফলে অনেক জমির মালিক বাধ্য হয়েই মাটি বিক্রি করতে হচ্ছে।

মাটি ব্যবসায়ী সাইফুল ও সোহেল জানান, আমরা কারো জমির মাটি জোর করে কাটি না। কৃষকের জমির মাটি কিনে ইটভাটায় ও পুকুর ভরাটের জন্য বিক্রি করি।

টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মাটির উপরিভাগের ১০-১৫ ইঞ্চির মধ্যে উর্বরতা শক্তি থাকে। তাই এসব মাটি খুঁড়ে বিক্রি করার ফলে তা পুনরায় ফিরে আসতে ১০-১৫ বছর সময় লাগে। আর বারবার তা খোঁড়া হলে সেসব জমি ফসল উৎপাদনে স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়তে পারে।

এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহারিয়ার রহমান জানান, খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।