আগুন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে বাসাইলের জশিহাটি গ্রামের মানুষের

আগুন আতঙ্কে গ্রামবাসী

অলক কুমার : টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের জশিহাটি উত্তর পাড়া সরকার বাড়ী এলাকায় প্রতিনিয়তই কোন না কোন বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে।

আগুন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ২০-২৫টি পরিবার। দূর্বৃত্তদের ধরতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে নারী-পুরুষরা।

এ ব্যাপারে বাসাইল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের জশিহাটি উত্তর পাড়া সরকার বাড়ী এলাকায় ২০/২৫টি পরিবার বাস করে; এই পরিবারগুলোর অধিকাংশ পুরুষই প্রবাসী।

আরো পড়ুন – টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় রেল সেতুতে কর্মরত প্রকৌশলীর মৃত্যু

গত তিন মাস যাবৎ প্রায় প্রতিরাতেই কারো বাড়ীর খড়ের গাদায়, কারো ট্রাক্টরে, কারো বৈদ্যুতিক মিটারে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়।

আগুন দেখে বাড়ির লোকজন চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এসে আগুন নেভায়।

সেখানে গিয়ে জানা যায়, মো. মতিয়ার রহমানের বাড়ির সরিষার টাগায় দুইবার; খোরছু মিয়ার খরের গাদায় ১০ বার; মো. আরিফ সরকারের বৈদ্যুতিক মিটার পুড়িয়ে দিয়েছে দুই বার, ট্রাক্টরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুই বার, ধানের আটিতে আগুন দিয়েছ, বিষ দিয়ে ১৩টি হাঁস-মুরগি মেরে ফেলেছ; মো. নুরুল ইসলামের বৈদ্যুতিক মিটার পুড়িয়ে দিয়েছে দুই বার; জেসমিন আক্তারের বৈদ্যুতিক তার পুড়িয়ে দিয়েছে; মো. মিজানুর রহমানের বৈদ্যুতিক মিটার পুড়িয়ে দিয়েছে।

ভূক্তভোগীদের কথা – 

এবিষয়ে জশিহাটি উত্তর পাড়া সরকার বাড়ির ভূক্তভোগী শিউলি আক্তার বলেন, আমাদের বাড়িতে তিনটি বৈদ্যুতিক মিটার, একটি খড়ের পালা ও একটি ট্রাক্টরে পরপর দুই বার আগুন ধরিয়ে দেয়, দুই বার সিঁদ কেটে চুরি ও মুরগির ফার্মে বিষ দিয়ে ১৩টি মুরগি মেরে ফেলে।

আরো পড়ুন – ধনীর ধন আছে, গরীব হাত পাততে পারে; মরণ মধ্যবিত্তের!!

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ অফিসে জানালে অফিসের লোকজন এসে দেখে নতুন মিটার লাগিয়ে দেয়। থানায় জিডি করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

স্থানীয় আলামিন সরকার বলেন, আমাদের এলাকার অধিকাংশ পুরুষই প্রবাসী। গত তিন মাস যাবৎ প্রায় প্রতি রাতেই কোন না কোন বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দূর্বৃত্তরা।

আমরা পাহারা দেয়ার সময় ওরা আমাদের লক্ষ্য রাখে, পরে সুযোগ বুঝে আগুন ধরিয়ে দেয়।

লতা আক্তার বলেন, আমাদের বাড়ীতে খড়ের পালায় ১০ বার আগুন ধরিয়ে দেয় দূর্বৃত্তরা।

আমাদের তিনটি গরু ছিল; আগুনে পোড়ার ভয়ে গরু বিক্রি করে দিয়েছি।

চেয়ারম্যান ও পুলিশের বক্তব্য –

ফুলকি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল আলম বিজু জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য সবুজের মাধ্যমে জানতে পারি ওই এলাকায় খড়ের গাদা ও বৈদ্যুতিক মিটারে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়।

আরো পড়ুন – শিহাব হত্যা মামলা : আর কোন আসামি গ্রেপ্তার নাই

তাদের থানায় জিডি করতে বলেছি, রাত জেগে পাহাড়া দিয়ে হাতে নাতে ধরিয়ে দিতে বলেছি।

তিনি আরোও বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি।

বাসাইল থানার এসআই আজহারুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। রাত জেগে পাহাড়া দিয়ে হাতে নাতে ধরতে বলা হয়েছে।