আমার শিহাব নাই, আমাগো ঈদও নাই – শিহাবের মা

ঈদের দিনে নিহত শিহাবের পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘৩ বছর আগে একবার দেশে আসছিল শিহাবের বাপে; সেবারেই শিহাবের সঙ্গে ওর বাপের শেষ দেখা।

গত কোরবানির ঈদে শিহাব ফোনে বাপেরে কইছিল যে সে একটা বড় গরু কোরবানি দিতে চায়।

সেজন্য এইবার ওর বাপে আগেই ট্যাকা পাঠায়া দিছিলো। এইবার আমার শিহাব নাই, আমাগো ঈদও নাই।’

কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলেন সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাসে খুন হওয়া শিহাবের মা আসমা বেগম।

কথা হয়  শিহাবের প্রবাসী বাবা ইলিয়াস হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পরের দিনই আমি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে আসি।

আরো পড়ুন – শিহাব হত্যা মামলা : আর কোন আসামি গ্রেপ্তার নাই

তিনি অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকেই সৃষ্টি স্কুলের প্রভাবশালী মালিকপক্ষ তদন্ত কাজে প্রভাব খাটাচ্ছে।

এসময় তিনি বলেন, যারা আমার সাথে আছে, শিহাবের হত্যার বিচার চাইতেছে, তারা যদি বিচারে সন্তুষ্ট হয়; তাহলে আমি সন্তুষ্ট।

তিনি আরো বলেন, আমি আগেও যেখানে ছিলাম, সেখানেই আছি, যে পর্যন্ত বিচার শেষ না হবে, সেখানেই থাকবো; প্রত্যেকটা লোক যদি বিচার পায়, শান্তি পায়, তবেই আমি বিচার পাবো। এটা এখন আর আমার একার দাবি না, একার চাওয়া না।

গত ২০ জুন টাঙ্গাইল শহরের সুপারি বাগান এলাকায় সৃষ্টি একাডেমিক স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে এই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাব মিয়ার (১১) মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে শিহাবের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

পরিবারের অভিযোগ, শিহাবের মরদেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল; এটি কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু বা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। তাদের সন্তানকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

অন্যদিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায়, ছাত্রাবাসের ৭ তলায় একটি বাথরুমে শিহাব ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আরো পড়ুন – হত্যাকারী আইনের আওতায় আসবে কি? শঙ্কায় নিহত শিহাবের পরিবার

রোববার (১০ জুলাই) ঈদের দিন শিহাবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান ও নাতির কথা মনে করে বারান্দায় বিলাপ করে কাঁদছেন শিহাবের মা-দাদি।

এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিহাবের সহপাঠী, সৃষ্টি স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং টাঙ্গাইলের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

তারা জানান দাবি আদায়ে আমরা এবার কঠোর আন্দোলনে নামব।’

তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য –

মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেলোয়ার হোসেন জানান, মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

আরো পড়ুন – ভূঞাপুর খাদ্য গুদামের চালে পাথর! রহস্য কি?

তিনি বলেন, ‘তদন্ত চলছে। প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’ তথ্য সূত্র – মির্জা শাকিল, সম্পাদনা – অলক কুমার