টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে এক বছরে ১৫ খুন

ঘাটাইল প্রতিনিধি : আজকের টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় গত এক বছরে ১৫টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

টাঙ্গাইল পুলিশ অফিসের অপরাধ শাখা সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

পরকীয়া প্রেম, যৌতুক, জমির বিরোধ, পারিবারিক কলহের জের’সহ বিভিন্ন কারণে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

টাঙ্গাইল পুলিশ অফিসের অপরাধ শাখার তথ্য মতে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলার ১৩টি থানায় ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮১টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তার মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫টি মামলা হয়েছে ঘাটাইল থানায়।

হত্যাকাণ্ডগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা – 

ঘাটাইলের হত্যা মামলাগুলোর মধ্যে আলোচিত উপজেলার দিগড় ইউনিয়নের কাশতলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের ট্রিপল মার্ডার।

গত ৩০ অক্টোবর একটি তালাবদ্ধ ঘরে সৌদি প্রবাসী জয়েন উদ্দিনের স্ত্রী সুমী বেগম (২৫), তার শ্বাশড়ি জমেলা খাতুন (৬০) এবং সুমি বেগমের প্রেমিক শাহজালাল (৩০)এর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

আরেকটি আলোচিত ঘটনা ছিল- উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের পন্ডিত কাছড়া গ্রামে স্বামীর হাতে স্ত্রী খুনের ঘটনা।

গত ২০ নভেম্বর রাতে স্ত্রী মিনারা আক্তারকে পারিবারিক কলহের জেরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেণ স্বামী আমিনুল ইসলাম।

স্ত্রীকে হত্যার পর লাশের পাশে বসেই থানায় ফোন দিয়ে স্ত্রী হত্যার খবর জানান পুলিশকে।

তিনি ফোনে পুলিশকে বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে আমি হত্যা করেছি। আপনারা এসে আমাকে নিয়ে যান’।

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে এবং আমিনুলকে গ্রেপ্তার করে।

গত ৪ ডিসেম্বর রাতে উপজেলার ছয়আনি বকশিয়া গ্রাম থেকে নুসরাত জাহান নিশি (১৯) নামে এক গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ঘটনার পর স্বামী আব্দুল আলিম বোরকা পড়ে পালাতে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে ধরা পড়েন।

এঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে পুলিশ স্বামী আলিমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।

২১ নভেম্বর পরকিয়ায় বাঁধা দেয়ায় প্রেমিককে নিয়ে স্বামী প্রতীক হাসানকে খুন করেন স্ত্রী লিজা আক্তার (২০)।

পরে স্বামীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি হার্ট অ্যাটাক বলে চালিয়ে দিতে লাশ নিয়ে আসেন স্বামীর বাড়ি কাজলা গ্রামে।

লাশ দেখে সন্দেহ হলে প্রতীকের পরিবার পুলিশে খবর দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে স্ত্রীসহ তিনজনকে আটক করে।

জিঞ্জাসাবাদে পরকিয়ার কারণে স্ত্রী স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে মামলায় স্ত্রী লিজা, তার মা ফাতেমা ও দাদি লাকি আক্তারকে জেলহাজতে পাঠায় আদালতে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের গড়জনাপাড়া গ্রামে পরকিয়ার জেরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্বামী।

ঘটনার পর স্বামী বিষপানে আত্মহত্যা চেষ্টাও করে। পরে এ ঘটনায় নিহতের ভাই কায়সার হামিদ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গত ১৯ এপ্রিল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে শ্বাসরোধে স্ত্রী বানেছা বেগম (৪০)কে হত্যা করে স্বামী খোকন পালিয়ে যায়। পরে তালাবদ্ধ ঘর থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশের বক্তব্য –

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম সরকার বলেন, অধিকাংশ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কিছু মামলার তদন্ত কাজ এখনো চলমান রয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়েরর মধ্যে বাকী মামলার তদন্ত কাজ শেষ হবে। সম্পাদনা – অলক কুমার