টাঙ্গাইল-কক্সবাজার সড়কের “অমর এন্টারপ্রাইজ” বাসে যাত্রী হয়রানীর অভিযোগ

টাঙ্গাইল-কক্সবাজার সড়কের "অমর এন্টারপ্রাইজ" বাসে যাত্রী হয়রানীর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইল-কক্সবাজার সড়কে যাত্রী হয়রানী আর নানা বিড়ম্বনার অভিযোগ উঠেছে বাস সার্ভিস অমর এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে।

যাত্রীদের সাথে স্টাফদের অসৌজন্যমুলক আচরনসহ নানা ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে দুর পাল্লার এই যাত্রী পরিবহনের বিরুদ্ধে।

এদিকে আরো একটি যাত্রীবাহী বাসে এক যাত্রীর লাকেজ লাপাত্তা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল থেকে দেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র শহর কক্সবাজারে যাতায়াত করে থাকে জেলার প্রচুর সংখ্যক যাত্রী।

একটু আরাম আর স্বাচ্ছন্দে যাতায়ত করতে যাত্রীরা অর্থের দিকে না তাকিয়ে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে যাওয়া সরাসরি বিভিন্ন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসকেই বেছে নিয়েছে।

আর এ সুযোগ নিয়েছে দু’একটি যাত্রী পরিবহন বাস। যাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন ও নানা হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে এসব পরিবহনের বিরুদ্ধে।

অমর এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছে যাত্রীদের অনেকে। এসব যাত্রীদের অভিযোগ, কক্সবাজার যাবার পথে কুমিল্লার একটি রেষ্টুরেন্টে যাত্রা বিরতি করে এ বাসটি।

ওই রেষ্টুরেন্টে গিয়ে প্রায়ই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে যাত্রীরা। সেখানে রেষ্টরেন্ট কর্তৃপক্ষের ইচ্ছেমত পরিবেশন করা খাবার খেতে বাধ্য করা হয়।

তাছাড়া খাবারের দামও তুলনামুলক অনেক বেশী নেয়া হয়। হোটেলে কেউ যদি রাতের খাবারের সময় তার পছন্দের খাবার অর্থাৎ রুটি বা পরোটা ক্ষেতে চায় সে সুযোগ নেই।

রেষ্টুরেন্টের তালিকা অনুযায়ীই চড়া মুল্যে খাবার ক্ষেতে হয়। এ কারণে অনেক যাত্রী নিজেরা খাবার নিয়ে বাসে উঠে।

এদিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ি হলেও এ সেবা থেকে অনেক সময় বঞ্চিত হয় যাত্রীরা।

বাসে বোতলজাত পানি পরিবেশনের নিয়ম থাকলেও অনেক সময় যাত্রীরা তা থেকে বঞ্চিত হয়।

আরও পড়ুন- বাবাকে দেখতে পেল না অনাগত সন্তান

যাত্রীদের অভিযোগ –

সম্প্রতি কক্সবাজার থেকে আসার পথে অমর এন্টারপ্রাইজের কয়েকজন যাত্রী এরকম হয়রানী শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ, তারা কক্সবাজার থেকে নির্ধারিত বাসে উঠার আধাঘন্টা পর বাস ছাড়ে।

বাসটি কক্সবাজার শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার আসার পর রাস্তায় থেমে যায়।

প্রায় ৪০ মিনিট পর বেশ কিছু যাত্রী উঠানো হয় সেখান থেকে। এ সময় বাসের সুপারভাইজান জানান, গতকাল একটি অনুষ্ঠানের জন্যে রিজার্ভে আসে তারা।

আজ এসব যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সময় বাসের এক যাত্রীর পানির পিপাসা লাগলে সুপারভাইজারের কাছে বোতলজাত পানি চায়।

কিন্তু বাসের লোকজন বলে আমরা কক্সবাজার থেকে বাসে বোতল নিয়ে আসতে পারিনি। চট্রগ্রাম থেকে পানি নেয়া হবে।

সুপারভাইজারের এই কথা শোনার পর বাসের মধ্যে সকল যাত্রীরা চিৎকার শুরু করে। উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলে দীর্ঘক্ষন।

এক পর্যায়ে একটি বাজারের কাছে বাস থামিয়ে যাত্রীদের জন্যে পানির বোতল আনে বাসের লোকজন।

যাত্রীদের অভিযোগ অমর এন্টারপ্রাইজের প্রায়ই এমন হয়রানীর শিকার হতে যায়।

এদিকে টাঙ্গাইল থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আরো একটি যাত্রীবাহী পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি এক যাত্রীর লাকেজ উধাও হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ব্যপারে ওই যাত্রী আইনের আশ্রয় নেবে বলে জানিয়েছে।

বাস কর্তৃপক্ষের বক্তব্য –

এ ব্যপারে জানতে চাইলে অমর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধীকারী বিদ্যুত ঘোষ বলেন, আমরা যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।

বাসের সুপারভাইজারসহ সংশ্লিষ্ট যে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে হয়রানীসহ কোন অভিযোগ থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির বক্তব্য –

টাঙ্গাইল-কক্সবাজার সরাসরি এ পরিবহনে যাত্রী হয়রানীর বিষয়ে জানতে চাইলে মালিক সমিতির প্রদীপ কুমার পাল বলেন, যাত্রীদের সেবার ব্যপারে টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির দায়বদ্ধতা আছে।

সে দায়বদ্ধতা থেকে আমরা অমর এন্টারপ্রাইজ কর্তৃপক্ষের সাথে অবশ্যই কথা বলবো।

যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।