ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা মানুষের অবাধ বিচরণ; ঝুঁকিতে নাগরপুর

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি হওয়ায় সেখান থেকে নানা কৌশলে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে চলে আসছে বিভিন্ন পেশার লোকজন। গত দুই তিন দিনে জরুরি পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, কিংবা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন উপায়ে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে লোকজন নাগরপুরে আসছে।

এদিকে তাদের বাড়ি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে হওয়ায় তাদের খুঁজে পেতে বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। তারা ওই দুই জেলায় নানান পেশার সাথে যুক্ত। তাদের অবাধ বিচরণের ফলে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে নাগরপুর উপজেলাসহ টাঙ্গাইল জেলা। এজন্য উপজেলা প্রশাসন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখতে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে আগতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের স্বেচ্ছা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

গত এক সপ্তাহে উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ কৌশলে বাড়ি চলে আসায় আতঙ্ক আরো বেড়েছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে। এতে নাগরপুর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও স্থানীয় লোকজন।

নাগরপুরে আসা ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার কাচঁপাই গ্রামের জিয়া মিয়ার ছেলে জাহিদ মিয়া। তিনি নারায়নগঞ্জে জুট মিলে কাজ করতেন। এ ছাড়া ভাদ্রা ইউনিয়নের ভাদ্রা গ্রামের মামুন গত ৩ দিন আগে বাড়ি চলে আসে। তিনি নারায়ণগঞ্জে টেক্সটাইল মিলে কাজ করতেন। গত বুধবার দিন মামুদনগর গ্রামের শামামরের ছেলে শাহিনুর, নুরু মিয়ার ছেলে হাফিজুর, ফজা মিয়ার ছেলে বেল্লাল নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়ি এসেছেন। তারা তিনজনেই একত্রে রুপগঞ্জের একটি গার্মেন্টেসে চাকরী করতেন। এ ছাড়া উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের কলিয়া গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ মিয়াসহ বিভিন্ন পেশার কয়েকজন নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে চলে এসেছেন। তারা বাড়ি এসে হোম কোয়ারেন্টিনে না থেকে অবাধ চলাফেরা করছে। লোকজন তাদের প্রকাশ্যে চলাফেরা না করার পরামর্শ দিলেও তারা মানছেন না। এতে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা. মো. রোকনুজ্জামান খান বলেন, সকল প্রকার যানবাহন বন্ধ থাকলেও নানাভাবে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে লোকজন আসছেন। কেউ একা আবার কেউ-বা স্বপরিবারে। ফলে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে নাগরপুর। তিনি প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন। এবং ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ ফেরত মানুষদের ১৪ দিন স্বেচ্ছা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য বলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘নানা কৌশলে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে কিছু লোক এসেছেন। তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেতন করা হচ্ছে। এ ছাড়া তাদের সংস্পর্শে কাউকে না যাওয়ার জন্যও সবাইকে বলা হচ্ছে। এরপরও যদি তারা প্রশাসনের নির্দেশনা না মানে তাহলে তাদের উপজেলা সদরে স্থাপিত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে রাখা হবে।