তিনমাস পর হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন; দুইজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি-দক্ষিণ) এর অক্লান্ত পরিশ্রমে তিন মাস পর মির্জাপুর উপজেলার বেঙ্গল ফ্যাক্টরির গেটের পশ্চিম পাশে হাত ও চোখ বাধা গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধারকৃত কামাল হোসেন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত চার জনের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতাকৃতদের মধ্যে দুইজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, বঙ্গবন্ধুসেতু-ঢাকা মহাসড়কে ছিনতাইকারী চক্র প্রাইভেট কারযোগে যাত্রীবেশে লোক উঠিয়ে ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চোখ ও হাত বেধে মোবাইল, টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাই করে পথিমধ্যে ফাঁকা জায়গায় ফেলে চলে যায়। গত বছরের ৭ নভেম্বর পাবনা জেলার কামাল হোসেন ঢাকা থেকে নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন। ওইদিন দুপুরে মহাসড়কে মির্জাপুর উপজেলার বাইমাইল বেঙ্গল ফ্যাক্টরির গেটের পশ্চিম পাশে হাত ও চোখ বাধা গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় তার মরদেহ মির্জাপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করে। মৃতদেহে থাকা একটি চিরকুটে কামরুজ্জামান নাম ও মোবাইল নম্বর লেখা পেয়ে পুলিশ ফোন করে। পরদিন ৮ নভেম্বর কামরুজ্জামান থানায় পৌঁছে মরদেহটি তার বাবা কামাল হোসেনের বলে সনাক্ত ও অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা(নং-৭, তাং-৮/১১/১৯ ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪দ.বি.) দায়ের করেন।

পুলিশ সুপার আরো জানান, ওই মামলার ভিত্তিতে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রযুক্তিগত কলাকৌশলের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন, বরিশাল জেলার উজিরপুর থানার নাককেলি গ্রামের মো. মসলেম মিয়ার ছেলে কাউছার আহমেদ (৩৫) ও একই জেলার শাকরাল গ্রামের ইসমাইল হাওলাদারের ছেলে মাইনুল ইসলাম সুমন (৩০)। তাদের স্বীকারোক্তিতে এ হত্যা মামলার অপর অভিযুক্ত ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানার ইটখোলা এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে মামুনকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে জানান, তারা মহাসড়কে ছিনতাই করে থাকেন। কামাল হোসেনের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করায় বাধা দিলে তাদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে তারা কামাল হোসেনের চোখ-মুখ ও হাত গামছা দিয়ে বেধে ফেলে এবং নাকে মুখে কিল-ঘুষিতে আহত করে। তাদের সাথে বেশি ধস্তাধস্তি হওয়ায় এবং একজনের হাতের কাটা জায়গায় ব্যাথা পাওয়ায় রাগ¦ানিত হয়ে তারা কামাল হোসেনকে নারকীয়ভাবে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। পরে মির্জাপুরের বেঙ্গল ফ্যাক্টরির গেটের পাশে ফাঁকা জায়গায় প্রাইভেট কার থামিয়ে মৃতদেহ দেহ ফেলে চলে যায়।