ধলেশ্বরীর ভাঙনে দিশেহারা নাগরপুরের কবলিতরা

বর্ষার শুরুতেই টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় নতুন করে ধলেশ্বরীর ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে নদী পাড়ের বসবাসকারীরা।

যে কোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে তাদের বাপ-দাদার শেষ সম্বল ভিটেবাড়ি। ফলে দিনরাত ভাঙন আতঙ্কে চলছে তাদের বাড়িঘর সরানোর কাজ। মনে হচ্ছে, নদী তাদের তাড়া করছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিনিয়ত নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মন্দির। নতুন করে ভাঙন কবলে রয়েছে মোকনা ইউনিয়নের আগ দিঘলীয়ার স্কুল ও উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বন্ধ জালশুকা ও আগ দিঘুলিয়ার রাস্তা বাজার ঘাট ও ঘর বাড়ি।

গত কয়েক দিনের উজান থেকে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ধলেশ্বরীর নদীপাড়ের ভাঙনের কবলে প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্কে কাটছে তাদের দিন রাত। ভাঙনে অনেকেই অন্যত্র পাড়ি জমিয়েছে। বিগত কয়েক বছরের ভাঙনে এ পর্যন্ত ঘর-বাড়িসহ শতাধিক একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে।

আগ দিঘুলিয়া এলাকার দিপালী মন্ডল (৩৫) বলেন, এক দিকে করোনা অন্যদিকে ধলেশ্বরী গ্রাস করছে আমাদের। গত কয়েক বছরের ভাঙনে আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছি। সর্বগ্রাসী ধলেশ্বরী আমাদের খেয়ে ফেলছে। এবার হয়তো স্বামীর একমাত্র ভিটেবাড়িও খেয়ে ফেলবে। এমন আর্তনাথ রতন, নন্দলাল, অনামিকাসহ আশ-পাশের নিরীহদেরও।

বন্ধজালশুকা এলাকার মোহাম্মদ আলী (৬৫) বলেন, ভাঙনের জন্য সরকারী কোন সহযোগিতা পাইনি। অপর দিকে যে জমিতে আবাদ করে ফসল খাই সেই জমিই নদীতে চলে গেছে। বছর বছর নদী ভাঙছে, কিন্তু এ ভাঙন থেকে আমাদের রক্ষার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মাসুদ মিয়া বলেন, ধলেশ্বরীর ভাঙন কবলিতদের তালিকা তৈরী করে ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট পাঠানো হয়েছে এবং ওই তালিকা হালনাগাদ করে আবার পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনের বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

টাঙ্গাইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুজ্জামান বলেন, ওই ভাঙন কবলিত এলাকা দ্রুত পরির্দশন করে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।