নাগরপুরে বাজার স্থানান্তর; তবুও মানছে না সামাজিক দূরত্ব

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সরকারি কলেজ মাঠে মাছ ও কাঁচা সবজির বাজার স্থানান্তর করেছে উপজেলা প্রশাসন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার থেকে মাছ ও সবজির বাজার নাগরপুর সরকারি কলেজের খেলার মাঠে বসবে। কিন্তু প্রশাসনের শত চেষ্টাতেও টাঙ্গাইলের নাগরপুরের বাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। বাজার স্থানান্তরের প্রথম দিন হওয়াতে কিছুটা অগোছালো বলে স্বীকার করছেন ব্যবসায়ীরা।

সরকারি নির্দেশ মোতাবেক পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সেখানেই প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাজার বসবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আপদকালীন সময়ের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়। এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বর্তমান সময়ের দুর্যোগ মোকাবেলায় সকলের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা কামনা করা হয়।

নাগরপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান একে এম কামরুজ্জামান মনি বলেন, কলাবাগান বাজারে কোনো প্রকার মাছ ও কাঁচা সবজির দোকানপাট বসতে পারবে না। নাগরপুর সরকারি কলেজ মাঠে সবাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সারিবদ্ধভাবে ক্রেতা-বিক্রেতারা বেচাকেনা করবেন। এর ব্যতিক্রম হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে নাগরপুর সরকারি কলেজ খেলার মাঠে অস্থায়ী বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুধ বাজারে মানুষ গায়ের সাথে গা লাগিয়ে দুধ বিক্রির জন্য দাড়িয়ে আছে। জনসাধারণ অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য বেচাকেনার নতুন স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবজির দোকানগুলো বসানো হয়েছে। মাছ বাজার এখনও অস্থায়ী বাজারে স্থানান্তর হয়নি। এজন্য প্রথমদিনে ক্রেতারাও বিপাকে পড়েন। নাগরপুরে সকল ধরণের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও তরকারি, মাছ ও মাংসের বাজারে সকালের দিকে কেনাকাটায় ভিড় লেগে যায়। এর ফলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে বাজার স্থানান্তরের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঝড় বৃষ্টির মৌসুমে এমন সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়লেও করোনা ভাইরাসের থেকে বাচঁতে তা মেনে নিয়েছেন তাছাড়া সাধারন জনগণ এক ধরণের স্বস্তিবোধ করছেন বলে বাজার করতে আসা অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়।

বাজার করতে আসা আমিনুর জানান, নতুন করে স্থাপন করা অস্থায়ী বাজারে এসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করা যাচ্ছে। এতে করোনা ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে। এই ব্যবস্থাটা প্রথম থেকে করলে ভালো হতো। কিন্তু আমাদের সকলকে আরও সচেতন হতে হবে কারন এখনও কিছু জায়গায় মানুষ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন না।

বাজার করতে আসা আরেক ক্রেতা রাজু বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিকল্প নেই। বাজারগুলোতে সব সময় ভিড় লেগেই থাকে। এতে করোনার ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। নানা ব্যবস্থা নেয়ার পরেও এখানে কোনোভাবে লোকসমাগম ঠেকানো যাচ্ছিল না। তাই বাজার স্থানান্তরের এ সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।

নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের রোধে মানুষকে ঘরে রাখতে দিন রাত মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। কেউ যদি আইন অমান্য করে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখে বা অযথা ঘোরাফেরা করে তার প্রতি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।