মূল শহরে কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারছে না বিএনপি

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি

বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল শহরের প্রাণ কেন্দ্রে কোন প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারছে না জেলা বিএনপি।

তাদের আন্দোলন সংগ্রাম সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে মুল শহরের বাইরে ২০০ গজ সড়কের মধ্যে।

পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় মুল শহরে কোন কর্মসূচি পালন করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

জেলা বিএনপির নেতারা জানান, প্রায় দুই বছরের অধিক সময় ধরে দলটি মুল শহরে কোন কর্মসূচি পালন করতে পারছে না।

গত ১৮ জুলাই মুল শহরের ঈদ গাঁ ময়দান থেকে পদযাত্রা শুরু করলেও পুরো শহর প্রদক্ষিণ করতে পারেনি।

পদযাত্রা শুরু পরেই তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয় বেপারি পাড়ার দিকে।

স্থানীয় নেতাদের কথা –

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশ বা সম্মেলন কোন কিছুর জন্যই মুল শহরে কোন মাঠ, পার্ক ব্যবহারের অনুমতি দুই বছরেরও আগে থেকে তারা পাচ্ছে না।

তাই বাধ্য হয়ে মুল শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। এমনকি গত বছর নভেম্বরে দলের জেলা শাখার সম্মেলন করতে হয়েছে লৌহজং নদের ওপারে কাগমারা এলাকায়।

অনুমতি না পেয়ে বাধ্য হয়েই ব্যাপারি পাড়া এলাকার সরকারি শিশু পরিবারের (এতিমখানা) সামনে থেকে শান্তিকুঞ্জ মোড় এই ২০০ গজের মধ্যে সকল কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত সোমবারও দেখা যায়, বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য নেতাকর্মীদের সরকারি শিশু পরিবারের সামনে সমাবেত হতে।

সেখানে কয়েক শ’ নেতা কর্মীর উপস্থিতিতে চার পাঁচ জন নেতা বক্তৃতা করেন। তারপর কর্মসূচি শেষ করে চলে যান।

বিএনপির একাধিক নেতা জানান, পুলিশ অনুমোদনের বাইরে গিয়ে কোন কর্মসূচি পালন করলে গ্রেপ্তার, মামলাসহ নানা হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়।

গত ১৮ জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির করতে গিয়ে দুই জন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছে। তাই পুলিশ নির্দেশনা মেনেই মুল শহরের বাইরে তারা কর্মসূচি পালন করছেন।

এ নিয়ে দলটির অনেক নেতা কর্মীর মধ্যেও রয়েছে বর্তমান নেতৃত্বে প্রতি ক্ষোভ।

তাদের বক্তব্য পুলিশের অনুমতি নিয়ে কোন আন্দোলন হয় না। বর্তমান নেতৃত্ব দায়সারাভাবে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করছে।

তারা পুলিশের বেঁধে দেওয়া ছক অনুসরণ করে কর্মসূচি পালন করছেন। তাই প্রত্যেক কর্মসূচিতেই দেখা যায় বেপারি পাড়ার এতিম খানার সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়।

তারপর ২০০ গজ অতিক্রম করলেই শান্তিকুঞ্জের মোড়ে পুলিশ বাঁধা দেয়।

আর সেখানেই কর্মসূচি শেষ করে দেয়া হয়। এর মধ্যে চলে ফটোসেশন।

পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে কর্মসূচি পালনের কথা প্রচার করা হয়।

নেতৃবৃন্দের কথা –

এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার ছাইদুল হক জানান, আন্দোলন কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাঁধা দিবেই।

বাঁধা পেলে আন্দোলন আরো জোড়দার হয়। কিন্তু বর্তমান নেতৃত্ব পুলিশের নির্দেশনা মেনে মুল শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করছে।

এভাবে কর্মসূচি পালন করে আন্দোলন কিভাবে জোরদার হবে তা বোধগম্য নয়।

এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, মুল শহরে কর্মসূচি পালনের অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না।

তাই শহরের বাইরে কর্মসূচি পালন করতে হচ্ছে। সামনে আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে।

তখন হয়তো কোন নিষেধাজ্ঞা মানা সম্ভব হবে না। নিষেধাজ্ঞা দিলে তা অমান্য করেই পুরো শহরে আন্দোলন করতে হবে।

প্রসঙ্গত, জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত বছর ১ নভেম্বর। সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়।

এখনও পুর্নাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। দুই সদস্যের কমিটি দিয়ে চলছে জেলা বিএনপি।