সিদ্দিকী পরিবারের তিন ভাই তিন আসনে শক্ত প্রতিপক্ষ

সিদ্দিকী পরিবারের তিন ভাই

অলক কুমার : আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইলের তিন আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন সিদ্দিকী পরিবারের তিন ভাই।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সাবেক সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, তার ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন তাদেরই ছোটভাই মুরাদ সিদ্দিকী তিনটি আসন থেকে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

আরো পড়ুন –

তারা তিন ভাই এই তিন আসনেই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী, তাই এই তিন আসনে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করছে সাধারণ ভোটাররা।

এদের মধ্যে আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

কাদের সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৮ (সখীপুর-বাসাইল) আসন থেকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

আর তাদের ছোট ভাইমুরাদ সিদ্দিকী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতি) ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন।

কাদের সিদ্দিকী বুধবার সখীপুরে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে লতিফ সিদ্দিকী কালিহাতীতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এসময় কাদের সিদ্দিকী, ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নেতা আজাদ সিদ্দিকী, লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য লায়লা সিদ্দিকী তার সাথে ছিলেন।

তারা মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সাড়ে ১২টার দিকে মুরাদ সিদ্দিকী কালিহাতীতে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর আগে মুরাদ সিদ্দিকী সকাল ১১টার দিকে টাঙ্গাইলে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

কাদের সিদ্দিকী যা বলেন –

বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বৃহস্পতিবার বিকেলে সখীপুরের হামিদপুর বাজারে পথসভায় বলেন, ‘লতিফ ভাইকে বলেছিলাম কালিহাতীতে গামছা প্রতিকে নির্বাচন করার জন্য।

লতিফ ভাই আমাকে বললেন, আমি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করবো, তুমি আমাকে সহযোগিতা করবে।

আমি বলেছি, আপনি আমার বড় ভাই, কালিহাতীতে আমি আপনাকে সমর্থন করবো।

সেখানে আমার দলের কাউকে গামছা থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না।

প্রসঙ্গত, কাদের সিদ্দিকী ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে টাঙ্গাইল-৮ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯৯ সালে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাথে তার বিরোধ হয়।

পরে তিনি পদত্যাগ করে উপনির্বাচনে অংশ নেন। বহুল আলোচিত সেই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন।

পরে তিনি কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন। এই দলের প্রার্থী হিসেবে ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

উল্লেখ্য –

অপরদিকে লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাতবার সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন; তিনি পাঁচ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একটি অনুষ্ঠানে হজ্ব, তবলিক জামাত ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন।

এ জন্য তাকে দল থেকে বহিস্কার ও মন্ত্রীসভা থেকে অপসারিত হতে হয়। সংসদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেন।

এ বছর সেপ্টেম্বর থেকে তিনি কালিহাতীতে আনুষ্ঠানিক গণসংযোগ শুরু করেন।

তার কর্মসূচিতে কাদের সিদ্দিকীসহ পরিবারের সবাই সহায়তা করলেও ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকী বিরোধীতায় নামেন।

মুরাদ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ ও টাঙ্গাইল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।